Tuesday, October 31, 2017

শুভ জন্মদিন হার্টলেস কার্ডিওলজিস্ট

বিশুদ্ধ ভালোবাসা বলে কোন টার্ম নেই। ভালোবাসা সবসময়ই বিশুদ্ধ এবং সদ্যোজাত শিশুর মত সুন্দর, সদ্য প্রস্ফুটিত ফুলের মতই পবিত্র। যেখানে শুদ্ধতার বালাই নেই, অবিশ্বাসের টানাপোড়েন নেই, শ্রদ্ধার ঝালাই নেই সেটা আর যাহোক ভালোবাসা হতে পারে না। আর কাউকে ভালোবাসাটা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে শুদ্ধতম অনুভূতি। পৃথিবীর সাতশ কোটি লোকের মাঝে একজন মাত্র মানুষকে কেউ ভালোবাসে এটা ভাবলেইতো শিহরিত হওয়ার কথা মানুষের, মনে মনে মানব জনমের স্বার্থকতা জয়ধ্বনি করলেও কিছুতেই কম হবে না।
যে কথা বলতেছিলাম, আমিও একবার সেই শুদ্ধতম অনুভূতি পেয়েছি একজনকে ভালোবেসে এবং তাকে ভেবে ভেবে এখনো পাচ্ছি। যার কাছে আমি কখনো মিথ্যে বলার সাহস করতে পারি নি, যার সাথে প্রতারণা করবো এমনটা ভুলেও আমার ধারনায় আসে না, যাকে না পেয়েও পাওয়ার আত্মবিশ্বাস রাখি এবং পদে পদে হারানোর ভয় আমাকে দুমড়ে মুচড়ে দেয় প্রতিনিয়ত।

নাহ, সে হয়তো কখনো আমায় ভালোবাসে নি, ভালোবাসার মত কোন কনটেন্ট আমার মধ্যে উপস্থিত আছে কিনা আমি তাও জানি না। থাকলেও সেটা তার পছন্দ কিনা তাও জানি না। সে কখনো জানতে দেয় নি। তবুও, চাঁদকে তো মানুষ একতরফা ভালোবাসে, ভালোবাসে বিশাল সমুদ্রকেও। নিজের স্বপ্নকেও তো ভালোবেসে বুকে লালন করে এক জীবন কাটিয়ে দেয় কত মানুষ, কেউ কখনো সেসবের প্রতিউত্তরে উল্টো ভালোবাসা দাবী করে বসে না। প্রকৃত ভালোবাসায় চাওয়ার কিছু থাকে না, দিতে পারার মাঝেই আনন্দ পাওয়া যায়। আমিও সেই মানুষটাকে এক তরফা ভালোবাসি। শুনেছি প্রেমিকরা স্বৈরাচারী হয়, জোর করে হলেও নিজের প্রেমকে কাছে পেতে চায়। আমি স্বৈরাচারী নই, আমি শান্ত শীতল নদীর মত প্রবাহিত হয়ে যাই সমুদ্রের মিলনের আশে, আমি বাবুই পাখির মত সাধনা করে একটু একটু করে ভালোবাসার খড়কুটো জমিয়ে শান্তির নীর বানাতে চাই। ভালোবাসার গাঁথুনি দিয়ে বানানো একটা লাভমহল থাকবে আমার। যেখানে ভালোবাসা কোন নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকবে না, কোন কৈফিয়ত থাকবে না, স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াবে।

বেশিরভাগ বাঙ্গালির দাম্পত্য সম্পর্কই শাসক আর শোষনের সম্পর্ক, রাজা আর ভৃত্যের সম্পর্ক। যে সম্পর্ক শাসনের সে তো দাসের, যে সম্পর্ক প্রতারণা আর মিথ্যাচারের সে তো রাজনীতি আর যে সম্পর্ক চুক্তির সে তো ব্যবসা। আমি এমন কোন সম্পর্ক কখনোই চাইব না আমার ভালোবাসার সাথে।

আমার একটা নীল ডায়েরি যার নামে লেখা হচ্ছে, আমার কম্পিউটারের একটা ফোল্ডারে শোভা পাচ্ছে যার সারি সারি ছবি, আমার ফোনের ওয়ালপেপারটাও দখল করে রাখছে যে নারী, যাকে নিয়ে পত্রিকায় লিখি নানা গল্প, তাঁর সাথে আমার কোন যোগাযোগই হয় না। খুব অবাক করা বিষয় না?

আমি জীবনে বেশিরভাগ সময়ই আদরে আদরেই বড় হয়েছি। ছোটবেলা থেকে তথাকথিত ভালো ছাত্রের তকমা গায়ে থাকাতে পাড়ার ভাঁড় থেকে শুরু করে স্কুলের স্যাররাও আমায় একটু সমীহ করত। হঠাৎ আমি অনুধাবন করলাম আমার জীবনে একটা জিনিসের বড় অভাব। সেটা হল উপেক্ষা, ইংরেজিতে যাকে ইগনোরেন্স বলে। কারো কাছ থেকে উপেক্ষা পেয়ে পেয়ে বুঝলাম জীবনে উপেক্ষা সইবার ক্ষমতা থাকাও দরকার এবং সেটা ভালোই অর্জন করে নিয়েছি। উপেক্ষা আর অপেক্ষা প্রায়ই সমোচ্চারিত শব্দ। তাই উপেক্ষাকে অপেক্ষা ভেবেই স্বস্তি পাই……

আমি প্রায়ই সেই বিউটি এণ্ড ব্রেইনের সাথে ব্রেইন গেমস খেলতাম। যেখানে তার অবচেতন মনের সাথে কথা বলতাম। অবচেতন মন কখনো মিথ্যে বলে না এবং তার অবচেতন মনের ভাষা আমাকে শান্তি দিত, সামনে পা বাড়ানোর রাস্তা দেখাতো, বুকের মাঝে স্বপ্নগুলোকে রঙ্গিন করে দিত অবশেষে আমার দিনটাও ভালো করে দিত। আমি জানি না হঠাৎ করে কি হল, কেন হল…. আমার হাতে সব ক্ষমতা নাই। ভিখিরীর সামনে পড়ে থাকা থালায় গাড়ির চাকা তুলে দিলে তার কিছু করার ক্ষমতা থাকে না কেবল চোখের জল ফেলে কাঁদা ছাড়া। ক্ষমতাহীনের প্রতিবাদইতো চোখের জল।

তুমি আমি মিলে আমাদের ছেলের নাম রেখেছিলাম “রেইডেন”। তোমাকে রেইডেনের মা বলে ডাকতাম। কত ইচ্ছে, কত স্বপ্ন, কত ভবিষ্যৎ কল্পনা মিশে থাকত ঐ একটা ডাকে সেটা আমার ঈশ্বর ছাড়া কেউ জানে না। ভুল বললাম, তুমিও জানো হানি তাই না?

ইচ্ছে ছিল, তার জন্মদিনে অনেককিছু করবো। তাকে ঢাকা এসে সারপ্রাইজ দিব। কোন রেষ্টুরেন্টে বসে কেক কাটবো। সেই পথ আটকে দিল মানুষটা। অধিকারহীন ভালোবাসা আর ভালোবাসাহীন অধিকার দুটোই কষ্টের। খুব কাছের ভাবা মানুষকে হঠাৎ করে অচেনা বা অপরিচিত ভাবার চেয়ে বেদনাদায়ক আর কিছু নেই। এ যেন নিজের হৃদপিণ্ডকে টেনে বাইরে দিয়ে আসা। কত ভালোবাসা জমে থাকে ওটায় কিন্তু টেনে বাইরে নিয়ে আসলেই অপরিচিত মনে হয়।

ভালোবাসা মানে ভালোবাসার মানুষটা ভালো থাকা, ভালোবাসা মানে তাকে তার মত বাঁচতে দেওয়া, ভালোবাসা মানে তার পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া। ভালোবাসা মানে ভালোবাসার জন্য সবকিছু সেক্রিফাইস করা। আর ভালোবাসা মানে ভালোবাসার মানুষটার সাথে এক জীবন কাটিয়ে দেওয়ার গোপন অভিলাষ নিয়ে বেঁচে থাকা। সেই অভিলাষ বুকে জমিয়ে রাখলাম নাহয়……

জীবন ক্ষণস্থায়ী। এক জীবনে তোমার সাথে দেখা হওয়াটা আমার সৌভাগ্য। আমি হয়ত পৃথিবীতে আরো একশো বছর আগে কিংবা একশ বছর পরেও আসতে পারতাম। কিন্তু আমার অন্যকোন জীবন হবে কিনা জানি না, হলেও সে জীবনে তুমি থাকবে কিনা তাও জানি না। এক জীবনে একটা চাওয়াও যদি পাওয়া না হয় সেটা অন্য কোন জীবন আমাকে ফিরিয়ে দেবে না। তাই এক জীবনে তোমায় পাওয়ার অপেক্ষা নিয়েই বেঁচে থাকলাম ভালোবাসার দাবী নিয়ে।

শুভ জন্মদিন শ্রাবণ, হার্টলেস কার্ডিওলজিস্ট, বিলাই, রেইডেনের মা, বিউটি এণ্ড ব্রেইন, হানিবানি, শয়তান। <3

ভালো থেকো
ভালো রেখো!

-অপেক্ষা

No comments:

Post a Comment