একই দোহাই শুনি রোজার মাস আসলেও। কেউ খারাপ কথা বললে, ছিঃ তুই রোজার মাসে এইকথা কেমনে বলিস, রোজার মাসে এইটা কেন করিস সেইটা কেন করিস, সব দোহাই রোজার উপর দিয়া দেয়। ভাবখানা এমন যেন রোজার মাসে যেসব করা যাবে না সেসব অন্যমাসে বুক ফুলিয়ে করা যাবে।
স্বাধীনতা দিবস একটি, বিজয় দিবসও একটিই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে একদিনেই উতলে উঠা দেশপ্রেম রাত পোহালেই নিভে যাবে। যারা পাড়ার মোড়ে মোড়ে হিন্দি গান বাজায় তাতে এটাই প্রমাণিত হয় যে বাঙলা গানে তারা জোস পায় না, বাঙলা গান তাদের টানে না। তবে কেন টানে না? গ্যাপটা কোথায়?
সারাবছর হোম থিয়েটারে, প্লে লিস্টে, হেডফোনে হিন্দি বাজতে থাকলে একদিন বাংলা বাজানোর মানে শো অফ ছাড়া কিছু নয়। আমরা তো শো অফের উদযাপন চাই নি, জাস্ট কোর অফ হার্ট থেকে আসুক প্রেমটা, দেশের গান শুনে হৃদপিণ্ডের 'বান্ডেল অফ হিজ' কেঁপে উঠুক এমনটাই তো হওয়ার কথা।
'জাতীয় সংগীত শুনে দাঁড়ানোর কি আছে-' বলে যে লোক ঘাড় ত্যাড়ামি করে তার বিজয় দিবসে নাগিন নাগিসের পরিবর্তে 'ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকায় মাথা' বাজালেই কি দেশপ্রেমের গ্রাফরেখা উর্ধ্বমুখী হয়ে যায়?
প্রজন্মের ভেতর থেকে যদি বাংলাটা ঠিক না আসে তো নাগিন নাগিনইতো বাজাবে, ফিলটাই যদি না আসে সবকিছু তো মেকি মেকিই মনে হবে। মেকির চেয়ে বাস্তবতা নিশ্চয়ই গ্রহনযোগ্য। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল জাতি হিসেবে আমরা আজও এক হতে পারলাম না। কখনো ধর্মের খড়গ, কখনো রাজনীতি তরবারি আমাদের দু ভাগ করেই রাখে। সরকার নামক শোষিত গোষ্ঠী যেটার ফায়দা লুটে হরিবল হরিবল করে গান ধরে।
বাংলাদেশ হোক মানুষের দেশ। কোন কাঠমোল্লার পৈত্রিক সম্পত্তি না হোক, না হোক কোন উগ্রবাদী ধুতি পরা পুরোহিতের। ধর্ম অধার্মিকদের দায় নেয় না, মানুষ অমানুষদের দায় নিয়ে তাদের শাস্তি দেয়।
.....সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
ধন্যবাদ বাংলাদেশ।

No comments:
Post a Comment