Wednesday, May 16, 2018

একাকিত্বের গান কিংবা নির্বাসন

ফার্মগেটের ব্যস্ত ফুটওভারব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে যে লোকটা ভিক্ষে করে; চারপাশে কোলাহল আর ব্যস্ততা কি তাকে ছুঁতে পারে?
বিয়ের রাতে যে কন্যার বাপ কপাল কুঁচকে ভাবে- এতগুলো যৌতুকের টাকা আমি কিভাবে পরিশোধ করবো; তাকে কি বিয়ে বাড়ির কোনো আনুষ্ঠানিকতা স্পর্শ করতে পারে?
রেজাল্টের আনন্দে যখন কলেজেপাড়া মুখরিত, 'এইবার ফেল করলেই বিয়ে দিয়ে দিবো'- হুমকি শুনে শুনে অভ্যস্ত হওয়া ফেল করা মেয়েটাকে কি সেই আনন্দ ছুঁয়ে যেতে পারে?
প্রেমিকার বিয়ের রাতে যে ছেলেকে বন্ধুরা কনসার্টে ধরে নিয়ে যায় মন ভালো করার জন্য বক্সের তীব্র শব্দদূষণ কোনোভাবেই কি তার কানে প্রবেশ করতে পারে?
মানুষ কখনো কখনো চরম নিঃসঙ্গ। পরীক্ষার হলে দাঁত দিয়ে কলম কামড়ানো পরীক্ষার্থীর মতো নিঃসঙ্গ। গাছের মগডালে উঠে নিচে মই খুঁজে না পাওয়া বাওয়ালির মতো নিঃসঙ্গ। সদ্য প্রেমিকাহারা প্রেমিকের মতো নিঃসঙ্গ। চাদরে জড়িয়ে রাখা বুকের মধ্যিখানে যে হৃদপিণ্ডটা উপেক্ষা সয়ে সয়ে একপাক্ষিক ভালোবাসায় মত্ত সে হৃদপিণ্ডটার মতো নিঃসঙ্গ।
নির্বাসনের জন্য গহীনে অরণ্যে কিংবা কোনো জনমানবহীন দ্বীপে যাওয়ার দরকার হয় না। বিশাল জনাকীর্ণ ময়দানে কিংবা ভরপুর আয়োজনে নিজেকে নিঃসঙ্গ আবিষ্কার করাটাই তো আসল নির্বাসন।

No comments:

Post a Comment